ঢাকা,রোববার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪

চকরিয়ায় ভূমিদস্যুতা, পৈতৃক ভিটামাটি জবরদখলের অভিযোগে সাংসদ জাফরের বিরুদ্ধে ভুক্তভোগিদের মানববন্ধ

স্টাফ রিপোর্টার, চকরিয়া ::’দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে কক্সবাজার-১ চকরিয়া-পেকুয়া সংসদ জাফর আলমের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হয়ে মাঠে নেমেছেন হাজারও ভুক্তভোগী।

তাদের দাবি, এমপি জাফর আলম ও তার লালিত সন্ত্রাসীরা বিভিন্ন সময় ভুক্তভোগিদের ব্যক্তি মালিকানাধীন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, জাল দলিল তৈরি করে জমি দখল, পৈতৃক ভিটামাটি জবরদখল করে বিক্রি ও হাজার হাজার একর চিংড়িঘের দখল করে নিয়েছেন।

এর প্রতিবাদ হিসেবে ২২ ডিসেম্বর (শুক্রবার) সকালে চকরিয়া কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার ও পেকুয়ায় পৃথকভাবে এমপি জাফরের বিরুদ্ধে মানববন্ধন করেন ভুক্তভোগীরা। এসময় কয়েক’শ ভুক্তভোগী ও নির্যাতনের শিকার নারী পুরুষের অংশ গ্রহণ করে।

মানববন্ধনে ভুক্তভোগীরা জানান, এমপি জাফর আলম ও দখলদার বাহিনী ক্ষমতার অপব্যবহার করে দীর্ঘদিন ধরে প্রতিষ্ঠিত স্কুল ঘর জবরদখল করে মোটা অংকের উৎকোচের বিনিময়ে অবৈধ ভাবে বিক্রি করেছে, আবার কারো দোকান ঘর, মৎস্য ঘের দখল, বসতঘর দখল করে নিয়ে তাদের পথে বসিয়েছে। এত দিন জাফর আলম এমপি থাকায় কেউ প্রতিবাদ করতে সাহস না করলেও আজ সুযোগ হওয়ায় তাদের অধিকার ফিরে পেতে সোচ্চার হয়েছেন বলে জানান ভুক্তভোগীরা।

মানববন্ধনে অংশ নেওয়া চকরিয়া উপজেলা যুবলীগের ১নং যুগ্ম সম্পাদক মামুনুল করিম বলেন, আমার মালিকানাধীন রামপুর মৌজার চিংড়ি ঘের জাফর আলম এমপি হওয়ার পরপরই তার ভাইপো জিয়াবুল, ভাগিনা মিজান, জামাল চেয়ারম্যানের বাহিনী দিয়ে জবরদখল করে নেন। আমার ঘের ফেরত দেওয়ার কথা বলে এমপি জাফর নগদ ২২ লক্ষ টাকা চাঁদা নেওয়ার পরেও আমাকে চিংড়ি ঘের ফেরত দেয়নি। এই যন্ত্রণা সয্য করতে না পেরে তিনি স্ট্রোক করে বর্তমানে প্যারালাইজড অবস্থায় জীবন যাপন করছেন বলে জানান।

বিএমচর এলাকার মাষ্টার আবু হানিফ বলেন, দীর্ঘ দুই যুগেরও বেশি সময় পূর্বে প্রতিষ্ঠিত অনুশীলন একাডেমি এমপি জাফর আলম বন্ধ করে দেয়। তার কিছু পরে ওনার অনুসারীদের দিয়ে একই নামে আরেকটি প্রতিষ্ঠান খুলে।

এমপি জাফর আলমের বাড়ির পাশের পালাকাটা ইমাম উদ্দিন পাড়ার জসিম উদ্দিনের স্ত্রী খুরশিদা বেগম বলেন, জাফর আলমের নির্দেশে স্থানীয় ভুমিদস্যু রফিক ও আমিন গং আমাদের পৈতৃক জমিতে নির্মাণ করা দোকানঘর জবর দখল করে নেয়।
বিএমচর ইউনিয়ন কৃষক লীগের সাধারণ সম্পাদক আলমগীর মেম্বার বলেন, এমপি জাফর আলমের নির্দেশে বিএমচর ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি বদিউল আলম পুরো এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছে।

এলাকার একাধিক মানুষের ঘরবাড়ি জবরদখল ও তাদের দীর্ঘদিনের ভোগদখলীয় জমি থেকে উচ্ছেদ করে তাদের পথে বসিয়েছে। আমি এমপি জাফরের অন্যায় অবিচারের প্রতিবাদ করায়, গত ১৫ আগস্ট যুদ্ধাপরাধী মামলায় যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামি দেলোয়ার হোসেন সাঈদীর গায়েবানা জানাজা নিয়ে সৃষ্টি হওয়া গন্ডগোলের কারনে হওয়া মামলায় আমাকে ও ইউনিয়ন ওলামা লীগের সভাপতিকে আসামি করে হয়রানি করা হচ্ছে।

মানববন্ধনে চকরিয়া-পেকুয়া এলাকার দুই শতাধিক ভুক্তভোগী নারী পুরুষ অংশ নেন। মানববন্ধন থেকে অবিলম্বে এই ভূমিদস্যু ও জবরদখলকারী চক্রকে আইনের আওতায় আনার জন্য প্রশাসনের কাছে দাবি জানান।

এবিষয়ে জানতে একাধিকবার ফোন দিলেও সাড়া দেননি এমপি জাফর আলম। তবে, সম্প্রতি এসব দখলবাজি অভিযোগ নিয়ে জাফর আলমের সঙ্গে কথা হয় প্রতিবেদকের। এসয় জাফর আলম সব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমি জমি গুলো কারো না কারো কাছ থেকে কিনে নিয়েছি। এবং দখলদারদের থেকে দখল মুক্ত করার কারনে আমার বিরুদ্ধে প্রতিপক্ষ ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে।

পাঠকের মতামত: